ভাবসম্প্রসারণ কি এবং লেখার নিয়ম?

ভাবসম্প্রসারণ বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিচে আমরা ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করবো।

'ভাবসম্প্রসারণ' কথাটির অর্থ কবিতা বা গদ্যের অন্তর্নিহিত তৎপর্যকে ব্যাখ্যা করা, বিস্তারিত করে লেখা, বিশ্লেষণ করা।ঐশ্বর্যমণ্ডিত কোনো কবিতার চরণে কিংবা গদ্যাংশের সীমিত পরিসরে বীজধর্মী কোনো বন্তব্য ব্যাপক ভাবব্যঞ্জনা লাভ করে। সেই সকল ভাববীজটি গুলোকে উন্মোচিত করার কাজটিকে বলা হয় ভাব-সম্প্রসারণ।  

'ভাববীজটি সাধারণত রূপকধর্মী, সংকেতময় বা তৎপর্যপূর্ণ শব্দগুচ্ছের আবরণে প্রচ্ছন্ন থাকে । নানা দিক থেকে সেই ভাবটির ওপর আলোকসম্পাত করে তার স্বরূপ তুলে ধরা হয় ভাব-সম্প্রসারণে। ভাববীজটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি, এ ধরনের কবিতার চরণে বা গদ্যাংশে সাধারণত মানবজীবনের কল্যাণকর কোনো উক্তির তাৎপর্যময় ব্যঞ্জনাকে ধারণ করে আছে। ভাব-সম্প্রসারণ করার সময় সেই গভীর ভাবটুকু উদ্ধার করে সংহত বক্তব্যটিকে পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। সেই ভাব রূপক-প্রতীকের আড়ালে সংগুপ্ত থাকলে, প্রয়োজনে যুক্তি, উপমা, উদাহরণ ইত্যাদির সাহায্যে বিশ্লেষণ করতে হবে। 

ভাব-সম্প্রসারণের কিছু নিয়ম:

 ভাব-সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে কয়েকটি দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন ৷যেমন :  

ক. প্রদত্ত চরণ বা গদ্যাংশটি একাধিকবার অভিনিবেশসহকারে পড়তে হবে । লক্ষ্য হবে প্রচ্ছন্ন অথবা অন্তর্নিহিত ভাবটি কী, তা সহজে অনুধাবন করা। 

 খ. অন্তর্নিহিত মূলভাবটি কোনো উপমা, রূপক-প্রতীকের আড়ালে সংগুপ্ত আছে কিনা, তা বিশেষভাবে লক্ষ করতে হবে। মূলভাবটি যদি রূপক-প্রতীকের আড়ালে প্রচ্ছন্ন থাকে, তবে ভাব-সম্প্রসারণের সময় প্রয়োজনে অতিরিক্ত অনুচ্ছেদ-যোগে ব্যাখ্যা করলে ভালো হয়। 

 গ. সহজ ভাষায়, ভাবসত্যটি সংক্ষেপে উপস্থাপন করা উচিত, প্রয়োজনে তাৎপর্যটি উদ্ধার করতে যুক্তি উপস্থাপন করে হবে।  

ঘ. মূল ভাববীজকে বিশদ করার সময় সহায়ক দৃষ্টান্ত, প্রাসঙ্গিক তথ্য বা উদ্ধৃতি ব্যবহার করা চলে। এমনকি প্রয়োজনে এঁতিহাসিক, পৌরাণিক বা বৈজ্ঞানিক তথ্যও উল্লেখ করা যায়। তবে ভুল বা তপ্রাসঙ্গিক তথ্য, উদ্ধৃতি দেওয়ার চেয়ে না দেওয়াই ভালো।  

ঙ. ভাব-সম্প্রসারণ করার সময় মনে রাখতে হবে যে, যেন বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি না ঘটে । বারবার একই কথা লেখা ভাব-সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে দূষণীয় ৷ নিচে নমুনা হিসেবে কয়েকটি ভাব-সম্প্রসারণের উদাহরণ দেওয়া হলো :


Jakaria Daria

11 Blog posts

Comments