বিশালদেহী হাতিকে মানুষ আয়ত্তে আনল কীভাবে?

মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব বলা হয় এবং মানুষই এটা বলে। এই সেরাটা বলে তারা বুদ্ধির কারণে। সেই বুদ্ধি দিয়েই তারা বিশালদেহী হাতিকে বাগে এনেছে। হাতি তাদের বিয়ে বাড়িতে পোঁছে দেয়, ঘুরতে নিয়ে যায়, সার্কাস দেখায়, এমনকি চাঁদাবাজিও করে। কিন্তু কীভাবে?

হাতিকে বাগে আনতে প্রথমে তারা একদম শিশু অবস্থায় হাতিকে মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনে!!

তার উপর করা হয় নানা রকম অত্যাচার। এই সময় হাতি-শাবকের গলায় ও পায়ে রশি বেঁধে আটকে রেখে বিভিন্ন ডাকে সাড়া দেওয়ানো শেখানো হয়, শুঁড় দিয়ে জিনিস তোলার প্রশিক্ষণ দেয় মানুষেরা। এই ধরনের প্রশিক্ষণকে স্থানীয় ভাষায় হাদানি বলে। কোনো নির্দেশ ঠিকমতো পালন না করলে শাবককে পেটানো হয় লাঠি দিয়ে।

আর অত্যাচারের ভয়ে হাতি শাবক ধীরে ধীরে তাদের সব কথা মানা শুরু করে। এই ভয় তাদের সারাজীবন থেকে যায়। ছোটবেলা থেকেই হাতিদের মাথায় এমন ভাবে ঢুকে যায় যে, তারা বড় হয়ে আর প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ফলে মুখ বুজে তারা যন্ত্রণা সহ্য করে সারাজীবনই পিঠে বোঝা বহন করে চলে। মানুষ এমনই সৃষ্টির সেরা জীব!

হাতির পিঠে চড়া কি খুব আনন্দের? তবে কেন বিয়ে করতে বরযাত্রী হাতির পিঠে চড়ে যায়? কেন নির্বাচনী প্রচার করতে হাতির পিঠে ওঠা লাগে?

হাতির শরীরের গড়ন ঘোড়া কিংবা উটের মতো না। হাতির পিঠ ভারী ওজন বহন করার জন্য উপযুক্ত না। কারণ চলার সময় তাদের মেরুদণ্ড ওঠা-নামা করে। ফলে পেছনের হাঁড়টায় নিয়মিত চাপ পড়তে পড়তে একসময় মেরুদন্ড ক্ষয়ে বা বেঁকে যায়। এতে যে হাতি হাঁটতে পারে না তা নয়, তবে তীব্র ব্যথা নিয়ে হাঁটে যেটা সে প্রকাশ করতে পারে না।

আর মানুষ তাদের উপর বসে দাঁত কেলিয়ে হাসতে হাসতে শ্বশুরবাড়িতে যায়, চাঁদাবাজি করা মাহুতদের আমরা প্রায়ই রাস্তায় দেখি। হালে নির্বাচনের প্রচারণার জন্যও হাতিদের ব্যবহার করা হচ্ছে।

মানুষ কত নির্মম, কত নিষ্ঠুর! তাদের নিষ্ঠুরতার কারণেই হাতি আজ একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। প্রতিনিয়ত বন কেটে আমরা তাদের আবাসন ধ্বংস করছি, রাস্তা বানিয়ে তাদের চলার রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছি।

আসুন, হাতির প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণের প্রতিবাদ করি। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে কিছুটা দায়িত্ব তো পালন করা উচিত মানুষদের।

ترقية الحساب
اختر الخطة التي تناسبك
إقرأ المزيد